img

আলু উৎপাদনে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা জয়পুরহাট। গুণগত মান ভালো হওয়ায় দেশের চাহিদা মিটিয়ে জয়পুরহাটের আলু বিদেশেও রপ্তানি হয়। এ বছর জেলার বিভিন্ন এলাকায় বীজ আলু রোপণে ব্যস্ত সময় পর করছেন কৃষকরা। তবে চাষ করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা।

তাদের অভিযোগ, কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে ব্যবসায়ীরা সারের দাম বেশি নিচ্ছেন। এতে উৎপাদন খরচ বাড়ছে।

 

কৃষকদের অভিযোগ, সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে ৫০ কেজির প্রতি বস্তা ইউরিয়া সারে অতিরিক্ত ২০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে পটাশ সারে বস্তা প্রতি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, ফসফেটে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা বেশি নিচ্ছেন ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা। এমনকি রসিদ চাইতে গেলে তাদের কাছে সার বিক্রি করবেন না বলে ধমকাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

সংকট থাকার কথা স্বীকার করলেও দাম বেশি নেওয়ার এমন অভিযোগ মানতে নারাজ ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, কৃষকরা পরিমাপের অতিরিক্ত সার ব্যবহার করায় কিছুটা সংকট দেখা দিয়েছে। তবে কারসাজি হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্যদিকে জয়পুরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, সারের কোনো সংকট নেই। পর্যাপ্ত পরিমাণে সার মজুত আছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জয়পুরহাটে এবার আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৮ হাজার ৩৬৫ হেক্টর জমিতে। এরই মধ্যে প্রায় ৯০ ভাগ জমিতে আলু রোপণের কাজ শেষ হয়েছে। সেসব জমিতে এখন নিড়ানি দিয়ে সার প্রয়োগ করে বাঁধাইয়ের কাজ চলছে। এ সময় কৃষকদের ইউরিয়া সারের প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি।

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার কৃষকরা জানান, নিড়ানি দেওয়ার পর এখন আলুক্ষেত বাঁধাইয়ের কাজ চলছে। এ সময় ইউরিয়া সারের প্রয়োজন। কিন্তু সার কিনতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন তারা। পাওয়া যাচ্ছে না সার। প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) ইউরিয়া সারের দাম এক হাজার ১০০ টাকা হলেও বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ২৫০ থেকে এক হাজার ৩০০ টাকায়।

আরেক কৃষক বলেন, ‘সার পর্যাপ্ত রয়েছে বলে সরকার বার বার বলছে। সারের কোনো কমতি নেই। তবে সার কিনতে গেলে আর পাচ্ছি না। ’

আরেক কৃষক বলেন, ‘সার কিনলেও আমাদের রিসিট দিচ্ছে না। রিসিট চাইলে বলছে, বাইর হয়ে যাও। সার দেওয়া হবে না। ’

আরেক কৃষক বলেন, ‘সার পর্যাপ্ত রয়েছে বলে সরকার বার বার বলছে। সারের কোনো কমতি নেই। তবে সার কিনতে গেলে আর পাচ্ছি না। ’

সার সংকটের কথা স্বীকার করে ক্ষেতলাল উপজেলার সরকার অনুমোদিত সার ডিলার হাকিম ট্রেডার্সের মালিক আশরাফ আলী বলেন, ‘কৃষকেরা জমিতে যে পরিমাণ সার দিচ্ছে, সে পরিমাণ বরাদ্দ আমরা পায়নি। সেই পরিমাণ বরাদ্দ আমরা পেলে সার সংকট থাকতো না। তবে এখন কোনো সংকট নেই। আমরা দামও বেশি নিচ্ছি না। বাইরে (খুচরা ব্যবসায়ী) যদি কেউ দাম বেশি নেয় সেটা তো আমরা বলতে পারবো না। ’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রয়োজন অনুযায়ী সারের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। কৃষক যাতে ন্যায্যমূল্যে সার পায় সেজন্য আমরা সতর্ক আছি। অভিযোগ পেলে আমরা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবো। ’

এই বিভাগের আরও খবর