img

নেত্রকোনার মদন উপজেলার মাঘান ইউনিয়নের কলাগাছিয়া হাওরে প্রভাবশালীদের বাঁধ কেটে পানি নিস্কাশন করে মাছ ধরার ফলে বোরো ধানের প্রায় পাঁচ হাজার একর জমি অনাবাদি থাকার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে এলাকাবাসী গ্রাম্য সালিশ, মানববন্ধন ও নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক বরবারে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

জেলা প্রশাসকের নির্দেশে বিষয়টি সরজমিনে দেখতে মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা গতকাল সোমবার হাওরের ঐ বাঁধ এলাকা পরিদর্শন করেন।

অভিযোগ থেকে জানা গেছে, নেত্রকোনার মদন উপজেলার মাঘান ইউনিয়নের রানীহালা, কাতলা, রোহুলী ও ঘাটুয়া গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার একর জমিতে বোরো আবাদ হয় কলাগাছিয়া হাওরের পানি দিয়ে। এ বছর বোরো আবাদ শুরু করার আগেই মাঘান গ্রামের মাহাবুব মেম্বার, একই গ্রামের আবদুল গণি, ইয়াকুল, গাজী রহমান, রয়েলসহ কিছু প্রভাশালী মাছ ধরতে কলাগাছিয়া হাওরে ফসলরক্ষা বাঁধ কেটে পাশের খালে নামিয়ে নেয়। এতে করে হাওরের পানি শূন্য হয়ে পড়ে।

এরই মধ্যে কিছু কিছু জমিতে লাগানো ধানের চারা পানির অভাবে মাটি ফেটে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এতে এলাকার পাঁচ শতাধিক পরিবার বোরো ফসল আবাদ নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন।

বিষয়টি স্থানীয় মাঘান ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জহিরুল ইসলাম মাসুদকে জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। গত বুধবার রাণীহালা গ্রামের নিরঞ্জন চন্দ্র দাস, মুখশেদ আলী, সালেক মিয়া, আবদুল মজিদ, আবদুল হাইসহ এলাকার ১১০জন গণস্বাক্ষর করে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। 

রোববার এলাকাবাসী বাঁধ কাটার প্রতিবাদে ও তাদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবিতে কলাগাছিয়া বাঁধের ওপর মানববন্ধন করেছে। এলাকাবাসীর দাবি, ইউপি চেয়ারম্যানের লোকজন বাঁধ কেটেছে। তাই চেয়ারম্যানকে জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

মাঘান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জহিরুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ‘অভিযোগ দেওয়ার কথা শুনেছি। তবে, বিষয়টি যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তা সঠিক নয়। দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে দীর্ঘদিন বিরোধ চলছে। ইউএনও এলাকায় গিয়েছিলেন। বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করা হবে।’

মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাজজিনা শাহরীন বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর এসিল্যান্ড ও ভূমি কার্যালয়ের লোকজনকে নিয়ে সোমবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। যারা বাঁধ কেটেছে তাদের ডাকা হয়েছিল। কিন্তু তারা আসেনি। দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, ‘মদনে হাওরে ফসলরক্ষা বাঁধ কাটার লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইউএনওকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’

এই বিভাগের আরও খবর